অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় মিছিল করেছে আটকেপড়া পাকিস্তানিরা। যারা বিহারি নামে পরিচিত। এবারই প্রথম তারা বিজয় দিবস উদযাপন করলো।
রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের বড় মসজিদের সামনে থেকে তাদের এই মিছিল শুরু হয়। বিজয় মিছিলটি মিরপুর ১১ নম্বর, মিরপুর ১০ নম্বর, মিরপুর ১৩ নম্বর, কালশি এলাকা ঘুরে আবার ১১ নম্বর বড় মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে যোগ দেওয়া নতুন প্রজন্মের বিহারি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীরা বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা বাংলাদেশি, এটা আমাদের পরিচয়। আমাদের এখনও আটকে পড়া পাকিস্তানি হিসেবে ট্রিট করা হয়। আমাদের পূর্বসূরিরা কী করে গেছেন, বা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা অবশ্যই লজ্জিত। আমরা এখন আমাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু চাই।
মিছিলে যোগ দেওয়া ‘ওয়েলফেয়ার মিশন অব বিহারিজ বাংলাদেশ’- এর সভাপতি মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হয়েছে। আগে পূর্ব পাকিস্তান ছিল, আমরা সেখানে জন্মগ্রহণ করেছি, আর স্বাধীনতার পর আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা প্রমাণ করতে চাই, আমরা বাংলাদেশি।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছি। অনেকেই ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের পাকিস্তানি আখ্যা দিয়ে থাকে। যে কারণে আমাদের রিহ্যাবিলিটেশন হচ্ছে না।’
এতদিন পরে কেন বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় মিছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে এই বিহারি নেতা বলেন, ‘আমরা আর্থিকভাবে এখনও এতটা সচ্ছল হয়ে উঠতে পারিনি। যে কারণে বড় কোনও প্রোগ্রাম করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অনেকের সঙ্গে কথা বলে, অনেককে বুঝিয়ে অবশেষে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের বিজয় মিছিল করতে সক্ষম হয়েছি। ক্যাম্পের প্রতিটি লোকজনের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি এবং তাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা বিজয় মিছিলটি করছি।’
বাংলাদেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘চার লাখ বিহারি, যারা এখন বাংলাদেশি, তাদের জায়গা হচ্ছে না। আমাদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্ত মন্ত্রণালয়কে বলেছিলেন। সে বিষয়টি এখনও ঝুলে আছে।’
‘ওয়েলফেয়ার মিশন অব বিহারিজ বাংলাদেশ’- এর সভাপতি মোস্তাক আহমেদ (সাদা টুপি পরিহিত) বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়া অনেকেই জানান, বিজয়ের এই দিনে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, আমরা আমাদের পুনর্বাসনের জন্য আবারও আন্দোলন শুরু করবো। আমরা বাংলাদেশি, আমাদের পুনর্বাসন হবে—যা সরকার এরইমধ্যে জানিয়েছে, কিন্তু আমলাতন্ত্রে আটকে আছে। নানা কারণে ক্যাম্পে অশান্তি লেগেই থাকে। সরকার আমাদের প্রাপ্য সম্মানটি বুঝিয়ে দেবে— এটাই আমরা আশা করছি। আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আগেও ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতে থাকবো।
Leave a Reply